গত ৬ জুলাই হুট করেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন তামিম ইকবাল। এরপর তার ক্রিকেটে ফেরাটা ছিল বেশ নাটকীয়। বিসিবির কারও মাধ্যমে তামিমের সংযোগ না পেয়ে, মাশরাফি বিন মুর্তজার মাধ্যমে ডেকে পাঠান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ও তামিম-মাশরাফির উপস্থিতিতে সেখানে বৈঠক হয়। এরপর দুই মাস বিশ্রামে থেকে নিউজিল্যান্ড সিরিজ দিয়ে প্রত্যাবর্তন হয় দেশসেরা এই ওপেনারের। এখন তামিম বিশ্বকাপ দলে না থাকায় এ ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পূর্ব-সাক্ষাতের বিষয় টেনে এনেছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা।
তামিমের অবসরের প্রসঙ্গ টেনে ভিডিও বার্তায় মাশরাফি বলেন, ‘পৃথিবীর যেকোনো প্লেয়ার যখন অবসরে যায়, প্রত্যেকটা প্লেয়ারই কিন্তু এই খেলাটা খুব পছন্দ করে। বিদায় নেওয়ার সময় তাই তাদের মন-মানসিকতা ভালো থাকে না। তারই বহিঃপ্রকাশ আমরা দেখেছি, যখন সে চট্টগ্রামে রিটায়ারমেন্টের ঘোষণা দিয়েছে। সে কিন্তু আবেগের কারণে কথা ঠিকভাবে বলতে পারেনি, কান্নাকাটি করেছে। তবে সেখানে ও কাউকে ব্লেইমও করেনি। মানে পরিষ্কারভাবে তামিম বুঝে-শুনে রিটায়ারমেন্টে গিয়েছে।’
‘তারপর কী হলো? বোর্ডের কেউ তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিল না। কেন যোগাযোগ করতে চেয়েছিল, কারণ ওই মুহূর্তে তামিমের রিটায়ারমেন্টে যাওয়ার দরকার নেই। তখন প্রধানমন্ত্রী তামিমকে ডেকে অনেক্ষণ কথা বলেছেন, প্রায় দেড়-দুই ঘণ্টার মতো। শেষমেষ যে কথাটা ইম্পর্ট্যান্ট, যে মেসেজটা ছিল- প্রধানমন্ত্রী চেয়েছিলেন তামিম যাতে ওয়ার্ল্ডকাপ খেলে। তামিমও পরে মিডিয়ার সামনে এসে সেই বহিঃপ্রকাশ করেছিল। এরপর আর কথা নেই যে আমি অবশ্যই খেলব’, যোগ করেন সাবেক এই টাইগার অধিনায়ক।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পরও ঘটনার মোড় ঘুরে যাওয়ায় হতবাক মাশরাফি, ‘যে জিনিসটা প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত গড়াল, আমার মনে হয় না সেটা নিয়ে আর কোনো আলোচনার প্রয়োজন ছিল। যদি টিমের কোনো আলোচনা থাকে সেটি কোচ-ক্যাপ্টেন-টিম ম্যানেজমেন্ট যারা আছে; তারা যদি ইন্ডিয়ায় গিয়ে যেটা করার সেটা করতো। এখন কথা আসতে পারে যে তামিমকে ওইখানে গিয়ে অফারটা দেওয়ার পর যদি সে সিনক্রিয়েট করে। পৃথিবীর সব দেশে, সব প্রফেশনাল টিমে এই জিনিসগুলা হয়। ট্যাকটিকালি যদি কোনো সমস্যা হয়, সেটি ম্যানেজ করার দায়িত্ব কোচ-ক্যাপ্টেন ও পার্টিকুলার ওই প্লেয়ারের।’
বিশ্বকাপের দল ঘোষণার দিন সকালে বিসিবির কার্যালয়ে গিয়েছিলেন মাশরাফি। সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিসিবিতে আমাকে ডাকা হয়েছিল পার্টিকুলারলি কিছু কথা বলার জন্য, আসলে কোনো সিদ্ধান্ত জানানোর জন্য না। আমি বিসিবির কেউ নই, কোনো পোস্টেই আমি নাই যে আমি টিম সিলেকশন কিংবা যেকোনো পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলব। সে সুযোগটা আমার নাই, ক্রিকেট নিয়ে আমার কথা হয়েছে একান্তই ব্যক্তিগত জায়গা থেকে। সুতরাং আমি যাওয়ার সাথে এখানে
বিসিবির ম্যানেজমেন্টে সমস্যা আছে বলে ইঙ্গিত রয়েছে মাশরাফির কথায়, ‘পৃথিবীর যেকোনো প্রফেশনেই ম্যান ম্যানেজমেন্ট করে চলতে হয়, সেটা ঘরে কিংবা বাইরে সবাইকে করতে হয়। এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। তামিম অনেকদিন ধরে ক্রিকেট খেলছে, সে কোন জিনিস পছন্দ করে-কোনটা করে না সেটা আমরা সবাই জানি। সবাই জানে তাকে কোন জিনিস বললে সমস্যা হবে। তাই কাকে কোন জিনিস বলা যাবে কিংবা যাবে না, সেটা আমার মনে হয় আরেকটু ভেবেচিন্তে করা উচিৎ ছিল। কারণ ম্যান ম্যানেজমেন্ট যদি ঠিক না হয় তাহলে সবকিছু এলোমেলো হয়ে যায়। এটি আরেকটু ভালো হওয়া উচিৎ ছিল বলে মনে করি।
পাঠকের মতামত